ঢাকা: অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং তথ্য গোপনের মামলায় পৃথক ধারায় আট বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে সাবেক চারদলীয় জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের আপিল মঞ্জুর কেরে তাকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার একক বেঞ্চ এ রায় দেন।আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আইনজীবী শিশির মনির।এর আগে ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর বাবরের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে অর্থ দণ্ড স্থগিত করেছিলেন। সেই আপিলের শুনানি শেষে বুধবার রায় দেওয়া হয়।
২০২১ সালের ১২ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক মো. শহিদুল ইসলাম পৃথক ধারায় ৫ ও ৩ বছরের দণ্ড দেন। একইসঙ্গে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন।পরে এর বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেন।
২০০৭ সালের ২৮ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে যৌথবাহিনীর হাতে আটক হওয়া এ আসামির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের মামলাটি ২০০৮ সালের ১৩ জানুয়ারি রমনা থানায় দায়ের করা হয়। মামলাটি করেন সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম। তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৬ জুলাই দুদকের উপসহকারী পরিচালক রূপক কুমার সাহা আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিটে বাবরের বিরুদ্ধে ৭ কোটি ৫ লাখ ৯১ হাজার ৮৯৬ টাকার অবৈধ সম্পদ রাখার অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি দুদকে ৬ কোটি ৭৭ লাখ ৩১ হাজার ৩১২ টাকার সম্পদের হিসাব দাখিল করেছিলেন। তার অবৈধ সম্পদের মধ্যে প্রাইম ব্যাংক এবং এইচএসবিসি ব্যাংক দুইটিতে এফডিআর-এ ৬ কোটি ৭৯ লাখ ৪৯ হাজার ২১৮ টাকা এবং বাড়ি নির্মাণ বাবদ ২৬ লাখ ৪২ হাজার ৬৭৮ টাকা গোপন করার কথা উল্লেখ করা হয়।
সাবেক এই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও দুই মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে কারাগারে রয়েছেন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলাটি চালানো হয়। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। তবে হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন।
নৃশংশ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ওই ঘটনায় বিচারিক আদালত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল মধ্যরাতে চট্টগ্রামের সিইউএফএল জেটিঘাটে খালাসের সময় পুলিশ সদস্যরা আটক করে ১০ ট্রাক সমপরিমাণ অস্ত্র। এ ঘটনায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চোরাচালানের ঘটনায় করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
এ দুটি মামলা এখন হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল বিচারাধীন রয়েছে।